মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০১৩

কবিতা – ঊষসী ভট্টাচার্য

অসমাপ্ত
ঊষসী ভট্টাচার্য





আমাদের দীর্ঘশ্বাস ছুঁয়ে হেঁটে যায় না দেখা ভোর,
দরজা দেওয়া সভ্যতা মুখ বেঁকিয়ে তাকায়
তোমার আমার অক্ষমতায়।
আয়নার পর আয়না কত প্রতিকৃতি আঁকে,
যার কোন আসল পরিমিতি নেই,
সময়ের কত নকশা একের পর এক
বালিশে মাথা দিলেই ঠোকাঠুকি লাগে দুই স্বপ্নের ,
বুঝি, আদতে নকশাই এঁকেছি
কোন মূর্তি গড়ে ওঠেনি আমাদের নাগরিকতায়।




রুদ্র,
ঈর্ষার কানাকানি, তাচ্ছিল্যের হাসি, উপেক্ষার চলে যাওয়া,
সবই ভাবনার অবিশ্রাম বয়ে যাওয়া,
নইলে বলো কেন ,
আজ যে খবরের কাগজ সকালের কাড়াকাড়িতে ক্লান্ত,
কাল তাও বেঁচে দিই ,কাগজ অলাকে ডেকে ?
আমরা সময়ের তালে নাচছি রুদ্র,
স্মৃতিকে নাচাচ্ছি বিরহের বস্তা পচা ন্যাকামিতে ।
যদিও সময়ের যা নিয়ম তাই তো মানতে হয়,
মানাই তো নীতি,
যে বয়সে একটি ছেলের দরকার নারিসঙ্গ
তাকে তখন ঝুনঝুনি ধরালে হয় ?




রুদ্র, হারিয়ে গেছে আমাদের পালিয়ে যাওয়া বিকেল গুলো।
রঙ পালটেছে আমাদের চেনা শহর
লাল থেকে সবুজ নয়
নীল থেকে ধূসর
ধূসর থেকে বিবর্ণ

প্রেমের বুকে কত আলো!
গলির কোনে পালিয়ে দেখা হওয়া
পাড়ার কাকুর বকুনি খেয়ে দৌড়ে বাড়ি ফেরা!
পাল্টে গেছে সব।
ফ্ল্যাট কালচারে কাকু সম্বোধন ই উধাও
তুমি আমায় বলতে,
‘তোমরা বড় বেশি মডার্ন নিতা,
বাবার বয়সী লোক কে দাদা বল কেন?
এতে পাখনা গজায় কার?’
আজ সমস্ত জীবাণু তোমার রক্তে মিশেছে রুদ্র,
স্মৃতি ই কেবল ডানা ঝাপটেছে আলস্যে ,




আজ তৃতীয় বছর তোমায় ছাড়া দোল কাটালাম,
অনবরত নোনা পিচকিরিতে ভিজিয়েছি তোমায়।
আমি আর শান্তিনিকেতন যাইনা বসন্ত উৎসবে,
আমার বারান্দার টবে
আজ আর পলাশ ফোটে না রুদ্র,
এখন তুলসী গাছ লাগাই কেবল...
প্রয়োজন অবধারিত জেনে
বসে আছি জানলায়,
প্রতীক্ষার বিকেল পেরিয়ে রাত আসছে
বন্ধ চোখে প্রহর গুনছি তাই ।।