সোমবার, ১ অক্টোবর, ২০১২

শর্মিষ্ঠা ঘোষ

মুক্তি

বাপটা সখ করে নাম রেখেছিল ‘মুক্তি’

দু’ দুখানা রবি ঠাকুরের কবতে মুখস্ত বলতে পারা
পি ডিভিশনে মাধ্যমিক পাস ওর বাপটা ভুলভাল কাজের জন্যই সবিশেষ
তা সেদিন সবাই খুব মোচ্ছব করছিল
পাড়ায় পাড়ায় সোজা উল্টো পতাকা খাটিয়ে
‘জয়হিন্দ’ স্লোগান কপচে দিনভর মদ- মাংসের পিকনিক
আহ্লাদে পেটো উড়ে যাচ্ছিল বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর দিকে
আজ সব ক্ষমা করা যায় , আজ মুক্তিদিবস
সেই পুন্যলগ্নে ওর মা টা বুড়ি দাই কে এত্তেলা পাঠাল
বুড়ি ফোকলা দাঁতে মুচকি হেসে নাড়ি কেটে বাপটাকে বলল
‘ওরে , লক্ষ্মীবাই আইল তর ঘরে !’
বাপটা অতটা ব্যাকডেটেড নয় বোঝা গেল
যখন সে মেয়ের নাম রাখল, ‘মুক্তি’
গল্পটা এই অবধি স্মুদলিই এগোচ্ছিল
মুক্তি রা খুব একটা এগোয় না , আমাদের মুক্তি ও থেমে গেল একসময়
স্কুলছুট মেয়েটাকে পার করে বাপ- মা হাত ধুয়ে ফেলবে অতঃপর
সেই মুক্তি ওর ড্রাইভার বরের হাতে মার খেলে, ঝি গিরি করে বেঁচে থাকলে
বুড়ো বয়সে ছেলের হাতে গুঁতুনি খেলে কিছু বলার থাকতো না
কিন্তু আমাদের মুক্তি একটা স্বনির্ভর গোষ্ঠী বানিয়ে নাম দিয়েছে ‘মুক্তি’
সে এখন মুক্তি খোঁজা মেয়েগুলোর আদরের দিদি
সে ও একটা রবি ঠাকুরের গান ভালই গায়
‘আমার মুক্তি আলোয়, আলোয় ...’