অবভাস
রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায়
- দ্বিতীয় অধ্যায় -
অশ্রুসজল এই জুন মাস/ভোরে যেসব ময়ূরেরা তীব্র ইচ্ছে লিখেছিল/বিকেলে তাদের অপহরণ হল অতএব,
বৃষ্টি মুক্তিপণ/একান্ত উপায়
নদীটার রোদে যে মজা সেটা জানতে পরের দিন সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা। একটা ঝাঁঝালো গন্ধ বেরোয়। চারপাশের অনন্ত সবুজে নদী এই গন্ধসুধা ঢেলে দেয়। তখন চুপ করে বসে থাকলে রাতের কথা মনে হওয়া অনিবার্য। হতে পারে তার শাদা কার্ডিগানের বুক খোলা বোতামের মতই একটা চাঁদ উঠবে। তখন এই ঝাঁঝ উবে যাবে আর একটা তরল তরল আবেশ গিলে খাবে। সবাইকে।
তখন একটা তাঁবু খাটালেও হয়, না খাটালেও হয়।
এই নদীরই চুনো মাছ তখন ফরিদ মিঞার বিবির সুডৌল তালুতে আঁশহীন হচ্ছে। এরপরেই পেঁয়াজ, শুকনো লঙ্কা, রসুন আর আদা বাটাতে আর্দ্র হয়ে কড়াইতে ডুব দেবে।
রিফারগুলো হাতে হাতে ঘুরে সাঙ্গ হবে। তারপর কেউ একজন বোতলটাকে উল্টো করে কনুই দিয়ে তার পাছায় মারতেই মুখ দিয়ে খুলে যাওয়ার যে শব্দটা বেরোবে, সেটা শুনেই সবাই চাঁদের দিকে হাঁ-মুখ উঁচিয়ে, যেন শীৎকার তুলে, বলবে উল্লাস।
আর বলার সাথে সাথেই এই অক্ষর প্রথমে বর্ণে, তারপর ধ্বনিতে ভেঙ্গে যাবে। ঝরে পড়বে নদীগর্ভে।
তারপর ভেসে যাবে।
নেশাই এত নেশা করবে যে কৃষ্ণান্ধকারও লজ্জা পাবে।
রাতের অভুক্ত খাবার খেতে আসা নেহাতই গ্রাম্য কুকুরগুলো, সেই সব কাছে-দূরে হিংস্র অথচ উজ্জ্বল দৃষ্টি স্থাপন করে আছে যে বা যারা, তাদের দেখে পালাবে।
ভোর ভোর চা-বাগানের ঢালে অসংখ্য ম্যুরের কেকাধ্বনিতে আবিষ্কৃত হবে শরীরগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে এই ঘাস-জমির ওপর।
গরু-ছাগল ততক্ষণে নদী পেরিয়ে এপারে চলে এসেছে। গাছে গাছে পাখী এসে বসা শুরু করেছে। রোদ থেকে আবার সেই ঝাঁঝ বেরিয়ে এসে ছড়িয়ে পড়ছে জলে আর জলের এই ভুবনডাঙায়।
গতরাতের যা কিছু সব স্বপ্ন পরিক্রমার মধ্যে ঢুকে পড়ছে। যেন এগুলোর কোন প্রয়োগ বাস্তবতা ছিলো না। কোনদিন ও কখনো না।
এখানেই তাঁবু গাঁড়তে হবে। বাকি জীবনের। প্রায় পঁয়ত্রিশ বিঘে জমি, এক লপ্তে। অধিকাংশ খন্ড-খতিয়ান। বাকিটা খাস। বিশেষত নদীতীরস্থ। যৎসামান্য একটু জীবন ও তা যাপনের জন্য আরও যৎসামান্য মাটি। সে তো ছ’ ফুটও নয়, যে তাকে নিয়ে প্যারাবেল লেখা হবে।
তাহলে মরি যদি সেও ভাল...এমন একটা আদ্যোপান্ত, ঠিক তার গল্পের গরুকে সর্বোচ্চ গাছে চড়িয়ে দিয়ে একটা স্থির বিশ্বাসের উপরিকাঠামো সে নিজে নিজেই খাড়া করে ফেললো।
যে কোন খেলাই শুরু হয় শেষ করার জন্য। একটা খেলা সে শুরু করেছিলো, এবার তাকে ধীরে সুস্থে গুটিয়ে নিয়ে আসতে হবে।
- দ্বিতীয় অধ্যায় -
অশ্রুসজল এই জুন মাস/ভোরে যেসব ময়ূরেরা তীব্র ইচ্ছে লিখেছিল/বিকেলে তাদের অপহরণ হল অতএব,
বৃষ্টি মুক্তিপণ/একান্ত উপায়
নদীটার রোদে যে মজা সেটা জানতে পরের দিন সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা। একটা ঝাঁঝালো গন্ধ বেরোয়। চারপাশের অনন্ত সবুজে নদী এই গন্ধসুধা ঢেলে দেয়। তখন চুপ করে বসে থাকলে রাতের কথা মনে হওয়া অনিবার্য। হতে পারে তার শাদা কার্ডিগানের বুক খোলা বোতামের মতই একটা চাঁদ উঠবে। তখন এই ঝাঁঝ উবে যাবে আর একটা তরল তরল আবেশ গিলে খাবে। সবাইকে।
তখন একটা তাঁবু খাটালেও হয়, না খাটালেও হয়।
এই নদীরই চুনো মাছ তখন ফরিদ মিঞার বিবির সুডৌল তালুতে আঁশহীন হচ্ছে। এরপরেই পেঁয়াজ, শুকনো লঙ্কা, রসুন আর আদা বাটাতে আর্দ্র হয়ে কড়াইতে ডুব দেবে।
রিফারগুলো হাতে হাতে ঘুরে সাঙ্গ হবে। তারপর কেউ একজন বোতলটাকে উল্টো করে কনুই দিয়ে তার পাছায় মারতেই মুখ দিয়ে খুলে যাওয়ার যে শব্দটা বেরোবে, সেটা শুনেই সবাই চাঁদের দিকে হাঁ-মুখ উঁচিয়ে, যেন শীৎকার তুলে, বলবে উল্লাস।
আর বলার সাথে সাথেই এই অক্ষর প্রথমে বর্ণে, তারপর ধ্বনিতে ভেঙ্গে যাবে। ঝরে পড়বে নদীগর্ভে।
তারপর ভেসে যাবে।
নেশাই এত নেশা করবে যে কৃষ্ণান্ধকারও লজ্জা পাবে।
রাতের অভুক্ত খাবার খেতে আসা নেহাতই গ্রাম্য কুকুরগুলো, সেই সব কাছে-দূরে হিংস্র অথচ উজ্জ্বল দৃষ্টি স্থাপন করে আছে যে বা যারা, তাদের দেখে পালাবে।
ভোর ভোর চা-বাগানের ঢালে অসংখ্য ম্যুরের কেকাধ্বনিতে আবিষ্কৃত হবে শরীরগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে এই ঘাস-জমির ওপর।
গরু-ছাগল ততক্ষণে নদী পেরিয়ে এপারে চলে এসেছে। গাছে গাছে পাখী এসে বসা শুরু করেছে। রোদ থেকে আবার সেই ঝাঁঝ বেরিয়ে এসে ছড়িয়ে পড়ছে জলে আর জলের এই ভুবনডাঙায়।
গতরাতের যা কিছু সব স্বপ্ন পরিক্রমার মধ্যে ঢুকে পড়ছে। যেন এগুলোর কোন প্রয়োগ বাস্তবতা ছিলো না। কোনদিন ও কখনো না।
এখানেই তাঁবু গাঁড়তে হবে। বাকি জীবনের। প্রায় পঁয়ত্রিশ বিঘে জমি, এক লপ্তে। অধিকাংশ খন্ড-খতিয়ান। বাকিটা খাস। বিশেষত নদীতীরস্থ। যৎসামান্য একটু জীবন ও তা যাপনের জন্য আরও যৎসামান্য মাটি। সে তো ছ’ ফুটও নয়, যে তাকে নিয়ে প্যারাবেল লেখা হবে।
তাহলে মরি যদি সেও ভাল...এমন একটা আদ্যোপান্ত, ঠিক তার গল্পের গরুকে সর্বোচ্চ গাছে চড়িয়ে দিয়ে একটা স্থির বিশ্বাসের উপরিকাঠামো সে নিজে নিজেই খাড়া করে ফেললো।
যে কোন খেলাই শুরু হয় শেষ করার জন্য। একটা খেলা সে শুরু করেছিলো, এবার তাকে ধীরে সুস্থে গুটিয়ে নিয়ে আসতে হবে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন