শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৪

গুচ্ছ কবিতা – পিয়াল রায়




 

আত্মীয়সদন

পিয়াল রায় 



কতদিন একা একা হাঁটছি 
চেনা , অচেনা কোন হাত নেই 
বাড়িটা কতদিন হয়ে গেল একা পড়ে আছে 


শিল্প বিপ্লব সবসময়ই শিল্প নির্ধারণ করে কি ?
ট্যাবু নিয়েও অনেকেই বেঁচে থাকে দিব্যি 
পুরনো বইয়ের গন্ধ নিতে নিতে একসময় ঘুমিয়ে পড়ি 
চেতনায় বাবা ডালপালা মেলে দেন 
শিকড় চাড়িয়ে যায় গভীর আত্মপ্রদেশে ...

এক এক বার ঝড় ওঠে 
আর নিজেকে বদলাতে বদলাতে খাদের ধারে এনে ফেলি
যেখানে আর এক পা অগ্রসরতা মৃত্যুর নামান্তর

তারপর মাঝ দুপুরে শহর জুড়ে নেমে আসে তুমুল বৃষ্টি 

অগণিত মানুষ পরস্পর হাত ধরে হাঁটতে থাকে উদ্দেশ্যের দিকে 

তখন আর কেউ বহিরাগত নয়
কেউ নয় অচেনা 

শহর হয়ে ওঠে আত্মীয়সদন 


এবং ঋতুপর্ণ

 পিয়াল রায় 


এত জীবন চারদিকে 
বেঁচে নিতে দাও অকুণ্ঠ 
শুধু বসন্ত নয় 
পেয়েছি অনিঃশেষ মহানগর তোমার 
কলমে - ছায়াতে - চিত্রে ছড়ানো ছেটানো 
মানুষের গান , মানুষের স্লোগান , ধ্বনি 
চিকচিকে শারদীয় উৎসবে
ঢেকেছে হৃদয়ে পাপের গন্ধ 

কোথাও আজ ধূর্ত হাসি নেই
কোথাও নেই চোরাগোপ্তা শ্বদন্ত 

প্রকাণ্ড স্বর জন্ম নিচ্ছে শূন্যে
অবাক হওয়ার বয়স পেরিয়ে এসে
অজস্র রিংটোনে ছড়িয়ে যাচ্ছে 
সবুজাভ মমতা ... দায়িত্ব ... অবলম্বন ... 

তোমার গিটার কুড়িয়ে নিয়েছি আজ 
জীবন বেঁধে দেব স্ট্রিং ... 




শারিবা

পিয়াল রায় 


মানুষের ঢল দেখলে 
শারিবার আজকাল বড্ড ঘুম পায় 
মনের ভিতর আভাসে ইঙ্গিতে তীব্র মাটীর ঘ্রাণ 

গতসনে উন্মাদ আগুনের ভয়ে বাপপিতেমো 
পাখপাখলির গ্রামজ উৎসব ছেড়ে চলে এসেছিল 
নিজস্ব কিছু শব্দ আর পরাভব পিছনে ফেলে আরো বেশি পূবে 
সুগন্ধ মৃত্তিকার আজন্ম উল্লাস ফেলে 

আজ চন্দ্রিল নাচগানের আসরে
শারিবার মনে পড়ে 
এক মানুষ ফসল কামনায় জমিতে নিজের শরীর থেকে হাড় খুলে পুঁতেছিল  
সেই হাড়ে ভানুমতীর খেল 
 কুটুমের ঘর বিস্তৃতি 

এক অদ্ভুত বিষাদ গান শারিবাকে আজকাল আচ্ছন্ন করে রাখে  

দিনরাত ... 



একটা সার্থক পঙক্তির খোঁজে

 পিয়াল রায়



একটা মাত্র সার্থক পঙক্তির খোঁজে 
চলে যাবো সমুদ্রের কাছে 
হাওয়া - বাতাসের ফিসফিস ঝাউবন , বালিচর
ধীবর বস্তিগুলোর বুনে রাখা জালে যেখানে
গনগনে সূর্যরশ্মির মতো পঙক্তি  জলো হাওয়ায়  
মাটীর সাততল নিচে 
ইষ্টিকুটুম , ভাতের গরম গন্ধ 
সবকিছু ছেড়ে নেমে যেতে পারি যে কোনদিন 
যেখানে  গুপ্ত অক্ষরধন শিকল জড়িয়ে বহুদিন 
কোন অজানা মুক্তির অপেক্ষায় 

শুধুমাত্র একটা সার্থক পঙক্তি পেলেই
পোড়া চাঁদের হাট থেকে যাযাবরী হাসি কিনে নেব