শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৪

গুচ্ছ কবিতা - সংগীতা বন্দ্যোপাধ্যায়




 

প্রায়শ্চিত্ত

সংগীতা বন্দ্যোপাধ্যায়


জলজ প্রত্যাঘাতে জমে উঠেছিল যে আগুন
তার মৃদু উত্তাপে উষ্ণ হয়েছি, তবু
          আঁচটুকু সচেতনে স্বীকার করিনি
উপরন্তু মুঠো মুঠো ছড়িয়েছি নুন!
কালো রক্তে ভেসে গেছে শিরা ও ধমনী...

সেই অভিশাপ বুকে মৃতবৎসা নারী
খড়কুটো জড়ো করে পুনরায় জ্বালাই আগুন—

তোমার বৈধ স্ত্রীর গর্ভাশয়ে পুনর্বার
          জন্ম নিক আমাদের অবৈধ ভ্রূণ


শিল্প

তারপর আগুনের গন্ধরা ফিকে হয়ে এলে
         হঠাৎ হঠাৎ শীতকাল মনে পড়ে
জ্বরে ভেজা শব্দেরা ঘন হয়ে আসে গুটিসুটি

অথচ তুমি তো রোজ যাবতীয় ভৌগোলিক
ইতিহাস হাতড়িয়ে, আঘাতে প্রলেপ দাও—
          আর আমি রোজ সেরে উঠি

নিঃশর্ত প্রেমিক তুমি
আমার অতীতগাথা সবকিছু জানো, শুধু
                   জানো না কীভাবে
তোমার উষ্ণতা থেকে প্রতিদিন জন্ম দিয়েছি
          আপাত-বিস্মৃত সেই গাঢ়তম স্নান

এইটুকু ধৃষ্টতা গোপন রেখেছি।



সহচরী

আজকাল আর একা নই।
ইদানীং ওর সঙ্গে থাকি।

ও আমার সহচরী আমার আঙুল।

আজকাল ও-ই পথ চেনায় আমায়
সযত্নে ধরিয়ে দেয় যাবতীয় ঠিকভুল
অন্ধের জষ্ঠির মতো আমি শুধু শক্ত করে ওকে ধরে রাখি।

স্পর্শের উত্তাপ ক্রমে ঘাম হয়ে ঝরে পড়ে ভাসে উপকূল
ব্যক্তিগত জলাশয়ে দুজনে সাঁতার কাটি
            আজন্ম সহচরী আমি আর আমার আঙুল।