ভাষাসমস্যা
টোকন ঠাকুর
ভাষার সমস্যা আছে। সব কথা সে প্রকাশে সমর্থ নয়। যতই পণ্ডিতি করি, সান্ধ্যসুর ধরি, ঠিক যেন হলো না—আমার কী বলার ছিল? ‘কী’ বলার মধ্যে আমি কী ভাব বোঝাতে চেয়েও, শেষ পর্যন্ত বাক্য যেন বাগে এল না, বরং বিরাট বিট্রে করে বসল। কুয়োর মধ্যে হারিয়ে যাওয়া চৈত্র মাসের মহাজোছনা যেন আমি আর তুলে আনতে পারলাম না। এদিকে পরিস্থিতি প্রতিদিন সূর্যাস্তের সঙ্গে ঝুপঝাপ আঁতাত শুরু করে দিল। কারণ, এই কালপর্বের নাম যুদ্ধক্ষেত্র। আমাকে ক্রলিং করে মাটিতে বুক বাঁধিয়ে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। মাঝেমধ্যে ভ্রম হচ্ছে, তবে কি আমার বুকপকেটে সে রকম কোনো চিঠি আছে—যার প্রেরক এক শহরবাসিনী, প্রহেলিকা চৌধুরী?
কিন্তু ওই যে বললাম, ভাষার সমস্যা! ভাষায় আমি জোছনা দেখাতে পারছি না, সূর্যাস্ত দেখাতে পারছি না, যুদ্ধ দেখাতে পারছি না, রক্ত কতটা লাল দেখাতে পারছি না, বাতাসের বেআদব আচরণ দেখাতে পারছি না! এমনকি আমার মন এখন কতখানি অবাধ্য যে সে আমার ঘরেই থাকে না, প্রতিদিন একই রাস্তায় একই দিকে যায়—মনোগমনের এ বর্ণনা লিখে বোঝানো অসম্ভব! অ্যাবসার্ড!! কারণ, ভাষা শিল্পকে যতটা সমর্থন করে বা শিল্পীকেও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করতে পারে কিন্তু শিল্প ও শিল্পীর মধ্যে যেটুকু প্রচ্ছন্ন দূরত্ব, যতটা লৌহবেদনা—ভাষা তা কখনোই স্পর্শ করতে পারে না।
কতটা নির্মম, দুর্ভাগ্যপীড়িত, যদি বলো, এই ভাষাতেই আমাকে লিখে জানাতে হবে সেই প্রচ্ছন্ন দূরত্বের গল্প, লৌহবেদনার ইতিকথা? মন-আনমনা, বাক্য যেন ভাব বুঝল না, বাক্য বিরাট বিট্রে করে বসল। অথচ, কুয়োর মধ্যে চৈত্র মাসের মহাজোছনা গড়াগড়ি যায়...
ভাষার সমস্যা আছে। সব কথা সে প্রকাশে সমর্থ নয়। যতই পণ্ডিতি করি, সান্ধ্যসুর ধরি, ঠিক যেন হলো না—আমার কী বলার ছিল? ‘কী’ বলার মধ্যে আমি কী ভাব বোঝাতে চেয়েও, শেষ পর্যন্ত বাক্য যেন বাগে এল না, বরং বিরাট বিট্রে করে বসল। কুয়োর মধ্যে হারিয়ে যাওয়া চৈত্র মাসের মহাজোছনা যেন আমি আর তুলে আনতে পারলাম না। এদিকে পরিস্থিতি প্রতিদিন সূর্যাস্তের সঙ্গে ঝুপঝাপ আঁতাত শুরু করে দিল। কারণ, এই কালপর্বের নাম যুদ্ধক্ষেত্র। আমাকে ক্রলিং করে মাটিতে বুক বাঁধিয়ে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। মাঝেমধ্যে ভ্রম হচ্ছে, তবে কি আমার বুকপকেটে সে রকম কোনো চিঠি আছে—যার প্রেরক এক শহরবাসিনী, প্রহেলিকা চৌধুরী?
কিন্তু ওই যে বললাম, ভাষার সমস্যা! ভাষায় আমি জোছনা দেখাতে পারছি না, সূর্যাস্ত দেখাতে পারছি না, যুদ্ধ দেখাতে পারছি না, রক্ত কতটা লাল দেখাতে পারছি না, বাতাসের বেআদব আচরণ দেখাতে পারছি না! এমনকি আমার মন এখন কতখানি অবাধ্য যে সে আমার ঘরেই থাকে না, প্রতিদিন একই রাস্তায় একই দিকে যায়—মনোগমনের এ বর্ণনা লিখে বোঝানো অসম্ভব! অ্যাবসার্ড!! কারণ, ভাষা শিল্পকে যতটা সমর্থন করে বা শিল্পীকেও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করতে পারে কিন্তু শিল্প ও শিল্পীর মধ্যে যেটুকু প্রচ্ছন্ন দূরত্ব, যতটা লৌহবেদনা—ভাষা তা কখনোই স্পর্শ করতে পারে না।
কতটা নির্মম, দুর্ভাগ্যপীড়িত, যদি বলো, এই ভাষাতেই আমাকে লিখে জানাতে হবে সেই প্রচ্ছন্ন দূরত্বের গল্প, লৌহবেদনার ইতিকথা? মন-আনমনা, বাক্য যেন ভাব বুঝল না, বাক্য বিরাট বিট্রে করে বসল। অথচ, কুয়োর মধ্যে চৈত্র মাসের মহাজোছনা গড়াগড়ি যায়...
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন