সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

কবিতা - মলয় রায়চৌধুরী



হেগোবোবা
মলয় রায়চৌধুরী


'দ্যাক', ঠাকমা বল্লে, 'কাঁচা বয়েসে তোকে চান করিয়ে
গায়ে গঙ্গাজল ছিটিয়ে হেগোমুক্ত কত্তুম ;
পাকা বয়েসে গঙ্গায় চান কল্লেও পার পাবিনে--
গবা ম্যাতর অ্যাগবার যদি গুয়ের ডাবা মাতায়
তোকে ছুঁয়ে দ্যায়, হেগোবোবা রইবি সব্বো-জীবন ;
সেই যে গলা বন্দ হয়ে চিঁ-চিঁ আওয়াজ বেরুবে
মুকের কতা মুকেই পড়ে পচবে, বুজলি তো বাপু ?'
'
ওহ, খুব জোর বেঁচেচি, কি বলো' বল্লুম আমি

ঠাকমা বল্লে, 'তা বেঁচেচিস বলে আলসেমি করিসনে ;
কত্তো বড়ো-বড়ো জনমনিষ গেল চৌঁতিশ বচ্ছরে
হেগো হয়ে সেই যে 'চিঁ-চিঁ কত্তে লাগল, বলবার নয়--
গ্যাঁটে কড়ি গুঁজলেই কি আর হেগোমুক্ত হয় ?
তুমি যতই ভাবো গবা ম্যাতর মাতায় টোপর পরে
গলা সোনা নে-যাচ্চে, হেঁটে-কাঁটা বোবা-কাঁটা হবেই--
তাপ্পর মুক দে চিঁ চিঁ চিঁ চিঁ ছাড়া আর কতা রইবেনে '
আমি বল্লুম, 'গবা ম্যাতর তো মরে ভুত, এখন আর
হেগো হবার ভয় নেই ; আমি গবাকে ছুঁইওনি
গবাও আমাকে ছুঁতে ভয় পেতো, তা ওর মাতায়
তোমার দুটো খাটা পায়খানার গলা সোনা থাগলেও '

ঠাকমা বল্লে, 'গবা ম্যাতর বিষ খেয়ে মল্লে কী হবে !
ওর ডাবা এখুন ওর শত্তুরের মাতায় উটেচে, দেকগিযা--
কত্তো বড়ো-বড়ো জনমনিষ উটিপড়ি করে তাকে ছুঁতে দৌড়ুলে
কেউ দাড়িপরা কেউ কলপরাঙা কেউ চুলপাকুনে কুঁজো
কেউ বেনেঠাউয়ের নাতবউ কেউ তিনকুড়ি ফুরন্ত গালফুলো ;
এখুন দ্যাকো, তাদের মুকদে চিঁ-চিঁ কেন, শ্বাসও বেরুচ্চেনে '
বল্লুম, 'জানি-জানি, সকলের গ্যাঁটে খুঁটেশ্মশানের ছাইকড়ি
আর তাই নিয়ে বাবু-বিবিদের মুকে তালা কানে কালা ;
আমি ডাবাডিবের মদ্দে নেই, বুজলে, সিংহ রাশির জাতক
হাই তুললেও গর্জন বেরোয়, ছুঁই না, ছুঁতে দিই না
নিজেই দেকোচো ' ঠাকমা বল্লে, 'তা দিকিচি '