সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

গদ্যের আঁকিবুকি - দেবাশিস মুখোপাধ্যায়



রাত্রি ভোর দুপুরের ইতিকথা
দেবাশিস মুখোপাধ্যায়

১.
অন্ধকারের সঙ্গে কথা বলবার সময় কখনো কখনো সেই মেয়েটি চলে আসে কি রুগ্ন তার মুখ, কোটরে বসা আর চোখ একটা মৃতগাছকে জড়িয়ে ধরে সমস্ত প্রশ্নগুলো হারিয়ে গেলে অন্ধকার একটা ঝড়ের ছবি আঁকে তাই সব উত্তর হারিয়ে যায় আবার চাঁদ গায়ে লেগে গেলেই অন্ধকার পাল্টে যায় ওই মেয়েটিকে সবুজ আর ডাগর হয়ে পানভর্তি ঠোঁটে এগিয়ে আসতে দেখি মেয়েটি যৌনকর্মী হয়ে গেছে কথা যেন ফুরোতে চায় না আর পাখিগুলি বিড়ালের থাবার আক্রমণের সম্ভাবনা সত্বেও তাদের সন্ধ্যা সংগীত থামতেই চায় নারাত্রি কবিতা লেখে রোজ কেউ পড়ে , কেউ পড়ে নাএতে রাত্রির কোনো মেঘ নেই , আঁধার নেই তারা রাত্রিকে চেনে জানালাও চন্দ্রিমার মুখশ্রীকে ধীরে ধীরে মেঘের রাস্তায় ওর হেঁটে যাওয়া দেখি আর বৃষ্টি পড়লে ও কি অতীত জীবনে যায় আর চিকচিক করে ওঠে নদীর সঙ্গেও রাত্রি আলাপ করে দিয়েছিল সারারাত ছুঁয়েছিলাম নদী আর অন্ধকারকে পৃথিবী ছুঁয়েছিলাম নদীর বুকে জেগে থাকা দুই পৃথিবী রাতজাগা বাদুড় অনেক গোপন কথা জেনে যায় জানলেই বা কি! পাশবালিশের কাছে জমা দিয়ে কান্নাগুলো অন্ধকার ভাঙতেই বেরিয়েছি

২.
ভোরগুলো সত্যিকারের ভোর কিনা ব্রাশ বলতে পারে নাপ্রত্যেক দিন মাজতে হয়, ঝকঝকে করে পর্দায় বিঞ্জাপন করে দিতে হয়ভোরবেলা যে মৃতমানুষকে আবিষ্কার করা হলো তার কোনো ঝামেলা নেই মর্গের মেলায় সে ভিড়ে গেছে আধগলা জলে দাঁড়িয়ে জবাকুসুমসঙ্কাশং বলেও লোকটা ঘাটে জবাকুসুম তেল মাথায় দেয় , হাতের গন্ধ শোঁকে তার গায়ে ভোরের গন্ধ নেই গাছের কাছে হেঁটে যাওয়া মানুষদের গাছ চেনে এদের অনেকেই বন কেটে শহর করেছে আর শহরকে কতকগুলো বন্ধ আর খোলা কারখানায় ঘিরে রেখেছে আবাসন তুলেছে অন্যের ভোর কেটে এইসব অক্সিজেন পিপাসুদের ভোর পাওয়ার অবিরাম লোভ ভোর কারো হতে পারে নাভোরের ভাবসম্প্রসারণ হয় নাবালিকা জানে নাঘাসমাটি আর কংক্রীটে টুপটুপ ঝরে পড়া শিউলি টেপের আঁচলে সাজিয়ে নেয় কার ছাদে ভীস্মদেবের হারমোনিয়ামএকলা ভোরের রেওয়াজে ভোর পাওয়া ঘোর করে রাখেরাখালেরা টাইস্যুটে চরতে চলে যায় ভোর ভার হয়ে হয়ে জমতে থাকে ভোরের স্কুলে ভোর বানানোর পর বালকটি লেখে একদিন মুক্তির ভোর কবে যে শিকল পরে নিজেই সেলে ফিরে গেল সে নিজেই জানে নাদিদিমনির ভোরের মেঘে আর কোনোদিন সিঁদুর খেলা হবে না সবদিন বৃষ্টিদিন
৩.
দুপুরের ঠোঁটে একটা পাখি ফেরত আসছে না বলেই রাগে ফেটে যাচ্ছে ধূসর চাদর বিছানো বিছানা ঝিম ধরা পাতায় লেখাই নেই পাতের উপর শূন্যতা নিয়ে কোনো অঙ্ক হয় নাগরমভাতের সেই গল্পেরও ফেরত আসার কোনো সম্ভাবনা নেই  গাছের তলায় একটা রাস্তাকে সমীহ করে গাছকে সরে আসতে হয়েছে তাই তলা একটা অদৃশ্য জাহাজের সন্ধানে চলে গেছে পুকুর বুঝতে পারছে না দুপুর কথা রাগের চারপাশে কোনো অনুরাগ নেই রা-ও নেই সমস্ত পাড়ার কাকচক্ষুগুলি কাকস্নানও করতে আসছে না আর