শনিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১২

কবিতা - আব্দুল্লাহ জামিল

আব্দুল্লাহ জামিল-এর দুটি কবিতা
স্মৃতির পাতার ভাঁজে


জানতে চাইলে তুমি, “সব মনে আছে?”

মনে আছে মনে আছে, সব কিছু ঠিক ঠিক ভাবে।
ভুলিনি কিছুই, ভোলা যায় না যে গৌরি!
সিগেরেটের প্রতিটি টানে বুক ভরে নেয়া ধোঁয়া
প্রতিটি দীর্ঘশ্বাসের সাথে উড়ে যাওয়া ধুলো-কণা
সবই যে মনে আছে, ভোলা কি যায় তা, গৌরি?
ঘসের ভেতর খাদ্য মুখে পিপড়ার ঘোরাঘুরি
আহারের পর পা দিয়ে মুখ যে ঘসে নেয় মাছি
পাতার আড়ালে ঘুঘু পাখিদের ডাক
নিয়মিত ভাবে ঠিক ঠিক সব মনে পড়ে যায়
ভুলে যাওয়া কি অতো সোজা?
উৎসুক নয়নে দেখা কুমার পোকার ঘর তৈরির কৌশল
ভেজা দেখে বুঝে নেয়া উই পোকার ঢিবির নতুন বানানো অংশ
লজ্জা পেয়ে চাঁদ তার মুখ ঢাকে মেঘের আঁচলে
ভুলিনি এখনো কিছু, ভুলতে পারি না আজো, গৌরি!
প্রত্যাখ্যাত গোলাপ যে স্মৃতির পাতার ভাঁজে শুষ্ক হয়ে আছে
ভুলে যাওয়ার চেয়ে এভারেস্ট বিজয়ও যে সহজতর
এখনো ভুলিনি কিছু, সব কিছু মনে আছে, গৌরি!
কেবল মৃত্যুই বুঝি ভোলাতে সক্ষম।

প্রজাপতি ও ফুলের গল্প


বাগানে একবার একটি নতুন ফুল ফুটলো

কি অপরূপ সৌরভে ভরা ছিলো যে সে!
লাল, নীল, রঙ্গিন প্রজাপতি, ভ্রমর,
সব তার গন্ধে হয়েছিলো দিশেহারা।
শুরু হলো ফুলটিকে জয় করার প্রতিযোগিতা
এতো প্রেম নিবেদনে ফুল তখন বিভ্রান্ত হলো।
এক কালো প্রজাপতিও আকৃষ্ট হলো ওর প্রতি।
এতো প্রতিযোগীর ভিড়েও ফুলের পাশের ডালে
যেয়ে বসলো সে একদিন।
কিছুক্ষণ দু’জনের আলাপ চললো
বিভ্রান্ত ফুল বুঝতে পারলো না কি প্রেমিক মন নিয়ে
কালো প্রজাপতিটা এসেছিলো নিকটে।
প্রজাপতির সাথে ফুলের কথোপকথন দেখে
সম্মিলিত ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেলো।
একদিন এক রাজপুত্র স্বদলবলে এসে ফুল গাছটা
তুলে নিয়ে রাখলো তার রাজমহলে।
প্রজাপতি তখন বিফল মন নিয়ে
বাগানে বাগানে, পথেঘাটে উন্মাদের মতো
উড়তে থাকলো।
ফুলের উপলব্ধি হলো কি রোমান্টিক ছিলো ওই
প্রজাপতি মন!
কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে।
আজ ফুল কাঁদে একা একা নির্জন মহলে
প্রজাপতি উড়ে বেড়ায় উন্মাদ হয়ে।