শনিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১২

কবিতা - পৃথা বারি

কবিতা - ১২
পৃথা বারি


১২।

স্বপ্নের শেষ দিকটায় সে দেখল,
একজন মান্ধাতার আমলের নগ্নপদ মানুষ
একটি গর্দভকে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে।
ধূসর ধান-কাটা ক্ষেতের মধ্য দিয়ে।

ঘুম ভাঙ্গার পর সে ভাবল,

গর্দভ হল কায়িক পরিশ্রমের প্রতীক।
মানুষ, মানুষের।
তাহলে এই স্বপ্নের অর্থ কি হতে পারে?

রুলহীন খাতায় বড় বড় করে লেখা

কিছু কথা- যেগুলো তার কাছে
হস্তাক্ষরের চেয়ে কিছু বেশী মূল্যবান,
তাদের দিকে কিছুক্ষণ অনিমেষ তাকিয়ে থাকার পর,
হ্যাঁ, অবশেষে সে সফল হল নিজের মিল খুঁজে পেতে।
না, মানুষ নয়, গর্দভটির সঙ্গে।

এতই ক্ষোভ এল নগণ্য এই প্রাণীটির মধ্যে,

একটার পর একটা,
সে তার সংগ্রহে থাকা অভিধানগুলোর ধুলো ঝাড়তে শুরু করল।
এরপর তাদের দিয়ে সে বানাল বেশ একটি ছোটখাট ইগলু।
আর ছোট্ট করে গুটি মেরে সে শুয়ে রইল তার ভেতর।

কিন্তু দুর্ভাগ্য তখনো ছিল বাকি,

বাসার ছায়াখানা ভেঙ্গে পড়ল
একটি ফরসা, শিক্ষিত, এবং বিদেশী রঙের ইমারতের পলিশড্‌ ত্বকে।
সুতরাং,
জাত যাওয়ার ভয়ে
মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হল কীটদষ্ট যত জঞ্জাল।
এখন সে খুঁটিয়ে দেখল,
বাঃ, বেশ মিল পাওয়া যাচ্ছে
স্বপ্নে পাওয়া মানুষটির সঙ্গে।

রাজাসনে অধিষ্ঠিত তাবৎ সিংহ এবং সিংহীদের সমালোচনা করতে করতে

এবং,
মূষিক থেকে ক্রমশ মূষিকতর হয়ে যেতে যেতে যেতে...

একদিন হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে সে দেখল,

নোয়ার নৌকা একশো আশি ডিগ্রী ঘুরে গেছে,
একলা একলা খসে পড়ে গেছে একটা ক্যালেন্ডার।