শনিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১২

কবিতা - মিত্রপক্ষ সাঁই

নীরা ভালো নেই
মিত্রপক্ষ সাঁই


ব্যামো তোমায় কখনো এলোমেলো করতে পারেনি তো!
তসরের শাড়ির ভাঁজ এখনও ভাঙ্গা হয়নি তো তোমার,
কথা ছিল আসবে, আসছে পূর্ণিমায়...
আমি ছিয়াত্তরে, তাই আপাতত বরাদ্দ দু'পেগ
শুনেছি এই পিপাসু জেনারেশানের কবিতার দেয়াল এখনও
মাতাল হতে শেখেনি।
শুকনো, তরলে মাতাল হয়না কম্পোজিটার মাধুরী রায়
বোর্ড বাঁধাই কবিতারা আত্মঘাতী!
আমার কবিতা ভর্তি ঠোঙ্গা, ছুঁড়ে মারা পাথর খন্ড
এখনও যত্নে লালিত, এদেশের ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের সঙ্গে।
আমার প্রেম আজ রাত্তিরে কঠিন, আন্দামানের পাথর এনেছি
পরখ করবো তোমার বুকে ঠুকে
গভীর রাতে আনন্দ বাজারের গলিতে হাঁটতে হাঁটতে কতবার যে তোমার হাত ধরেছি নীরা
শীত চাদর মুড়ি দিয়ে, নাক মুখ ঢেকে
ঝর্ণা বুকস্টলের বই ভর্তি চটের কার্টুন আঁকড়ে
শুয়েছি তোমার সাথে, সারা রাত
অজস্র বিক্রি না হওয়া নতুন বইয়ে তোমার মুখ, ঠাণ্ডা শরীর,
গরম গাল, এলো চুল, অনিশ্চিত গোলাপি টিপ
ভোর হয়ে এলে, আমি পূণ্য কুম্ভের নাঙ্গা কবি এক
নীরা,
আমার 'সাঁওতালি মাগী' চাটুজ্জে বাড়ির
বটগাছ তলায় লজ্জাবনত বিবস্ত্রা কাঠামো
ত্রিপুররাজের শোক, বসন্তমঞ্জরী,
এসপ্ল্যানেডে ফেরি করা সস্তার হাওয়াই
ময়দানের রাম গেলা বুড়ো কালো ঘোড়া
তিরবিদ্ধ শহীদ মিনার
আলখাল্লায় ঢাকা চান মুখের গলায় কলসি, গঙ্গার চোরা বালিতে তলিয়ে যায়
নীরা আমার, গেলো বছর অজস্র চান মুখ ভেসে উঠে আদি গঙ্গায় সহস্রবার
আমরা দুজনায় হেটে যাই কৃষ্ণচূড়া বিছানো পথে ঐ আলোকবর্ষের দিকে।
পৃথিবী এখন শুভরাত্রির কনে
কথা ছিল আসবে, আগামী পূর্ণিমায় তসরের সিল্ক পড়ে
নীরা, নীলাভ রক্ত কণিকারা, আজও তোমায় ঘিরে থাকে
আমায় সাজিয়ে দাও লাল চন্দনে, তোমায় সাজাবো শীতের মরশুমি কবিতায়।