মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

অণুগল্প - পাবলিহা আলাভী

খুনের ইতিবৃত্ত
পাবলিহা আলাভী



নতুন রেলষ্টেশনটির বিপরীতে একটি মার্কেট।সেই মার্কেটে আছে বইয়ের দোকান,চশমার দোকান,চামড়াজাত তৈরী পণ্যের দোকান ইত্যাদি।ওই মার্কেটের উপরেই বসে আছে একটি ব্যাংক।আর ওই ব্যাংকে কৃত্তিম শীতল পরিবেশে বসে কাজ করছে বেতুনভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ,কাজের ফাঁকে হয়তো চলছিল পাশের ডেস্কে বসা কলিগের সাথে ফিসফিস আলাপ কিংবা নিচু স্বরে সুখ-দুঃখ জড়িত ঘটনার বিনিময়,অথবা চলছিল মোচওয়ালা এবং ভূড়িওয়ালা বসের গুনগান,অথবা হতে পারে বদগান।এর মধ্যে কেউ আসলো ওই ব্যাংকে তাদের হিসাবের পাল্লা আরও ভারী করতে,কেউ আসলো একটি নতুন হিসাব খোলার জন্য,কেউ আসলো ওই ব্যাংকের কাছে হাত পাততে।আবার কেউ হয়তো আসলো হিসাবের টাকা হতে কিছু উত্তোলন করতে।ব্যাংকটি শহরের অন্যতম ব্যস্ততম শাখা,এই কারণেই হয়তো নগদ গ্রহণ এবং নগদ প্রদান বিভাগে লম্বা লোকের লাইন।নগদ গ্রহণ বিভাগের লাইনের মধ্যে দাঁড়ানো এক ব্যক্তি,পরনে তার সাদা শার্ট কালো প্যান্ট ,এয়ার কন্ডিশনার থাকা সত্ত্বেও কিছুক্ষণ পর পর পকেট থেকে একটি নেভী ব্লু কালারের রুমাল বের করে কপালের ঘাম মুছতে থাকলো,যে রুমালে লেখা আছে,হয়তো,এক প্রেমিকের গালে তার প্রেমিকার পাঁচ আঙ্গুল কষে বসানোর ইতিহাস।লাইন এগোতে থাকলো,তার পালা আসলো,চেক জমা দেয়ার মিনিটের ভেতরেই একে একে এক হাজার টাকার পনেরোটি নোট বুঝে নিয়ে একটি এনভেলাপে নোটগুলোকে ঠাঁই দিয়ে বেরিয়ে গেলো।এয়ার কন্ডিশনার রুম থেকে বেরিয়ে ভ্যাপসা হাওয়া গায়ে লাগলেও,তিনি রুমালটা আর বের করেননি।নিচে নেমে রাস্তায় এসে"মামা" সম্বোধন করে এক রিকশালাচালকেকে জিজ্ঞেস করলেন "কোর্ট যাবা??","২৫ টাকা"।কোনও প্রকার দ্বিমত না করেই রিকশায় উঠে গেলো।রিকশায় বসে এনভেলপের মুখটা সামান্য ফাঁক করে টাকার বান্ডেলটি দেখে আবার এদিক ওদিক তাকানোর পর এনভেলপের মুখিটি বন্ধ করে দিলো,যে এনভেলপের ভেতর লুকিয়ে আছে একটি খুনের ইতিবৃত্ত।