মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

গুচ্ছ কবিতা – অপু মেহেদী

দ্বিতীয় জন্ম অপু মেহেদী


মৃত্যুর পর মানুষ জেনে যায় পূর্ব জীবনের সকল গোপনীয়তা।
অতীত বিষয়ক বিলবোর্ডে তাকিয়ে দেখি চিত্রল নিয়তির সাথে চলে
জীনগ্রস্থ আবেগের অবিরাম জুয়া খেলা। অবিশ্বাসের ত্রিভূজ আঙিনার
দিকে বেঁকে যায় সকল বাউরি সম্পর্কের রাহস্যিক ঠিকানা। স্মৃতির
নাভিমূলে ভেসে থাকা এঁটো প্রেম বাজায় তীক্ষ্ণ খুনসুটির বেহালা।

হেঁয়ালীপনার এক অবাক উপস্থিতি টের পাই বস্তু পৃথিবীর ভুলগুলির
মাঝে। পরজন্মে যদিও আমি এক গল্পের ফেরিওয়ালা তবুও চোখের
ককপিটে ভেসে থাকে তোমার কৃষ্ণকুমারী দেহকল্প। আমার পকেটভর্তি
রকমারী সত্য মিথ্যা, তা নিয়ে ফেরি করি তোমার আমার পূর্বজন্মের
রূপকথার গল্প।

মোড়ক দেখেই মজেছিলাম পণ্যের প্রেমে।
তুমি যে এতটা বানিজ্যিক যদি জানতাম-
তাহলে নাহয় পাইকারী মহাজন হয়েই জন্মাতাম।


ঘুমের পাঠশালা

প্রণয়ের যে ঘুড়ি উড়িয়েছিলাম নাগরিক দুপুরে তার নৈব্যক্তিক
ডানায় অন্ধকার আঁকে নাবিক সন্ধ্যা। পূর্ণদের্ঘ্য রাতের শয্যায়
পুড়ে যায় নিদ্রাহীন চেখের লাল ওমলেট। নিয়তির চিবুক জুড়ে
হাসে প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিশ্রুতির কঙ্কাল।
তাই বিরহকাতর সম্পর্কেরাও জ্বালায় বিরতিহনি ট্রাফিক সিগন্যাল।

তবু ঘুমের পাঠশালায় ফের ভর্তি হলে-
অশরীরী জলে ডুবাই প্রাচীন সব তরল সাধ।
গাঢ় তন্দ্রায় পুড়াই অতৃপ্তির চিতার ফুলেল চৌকাঠ।

যেখানে জোয়াল কাধে গিযেছিলাম যৌথ চাষের আশায়
সেখানে বারুদ পেয়ে মত্ত হলাম পুড়িয়ে দেবার নেশায়


মা ও হারজিত প্রসঙ্গ


শ্রাবন সংক্রান্তির কালনিশায় আমার জন্ম বলে মায়ের অশ্রু
আর বৃষ্টিকে সমার্থক মনে হয়। দিনকে মনে হয় রাতের
হাস্যময় বহিঃপ্রকাশ।

হারজিতের মাঝেও আর যেন পার্থক্য দেখিনা। মা বলতেন-
যারা জিততে জিততে হেরে যায় আর যারা হারতে হারতে জিতে
যায় তাদের মাঝে কোন তফাৎ নেই। তাই উভয়কে সমান ভেবেই আমি
যুদ্ধে নামি।

প্ররোচনা না প্রেরণার পতাকা উড়ছে দূরে কোথাও…
মা, তুমি আমার হারজিতের মাঝখানে দাড়িয়ে কিসের পতাকা উড়াও…?



হিং টিং ছট

মাতাল পাপিয়ার প্রলাপ বকা দিন শেষে লেডিস হলে ঘুমপাড়ানি সন্ধ্যা নামে। সেয়ানা পরীর উথালপাতাল চুলে জোৎস্না কাঠের গন্ধ ভাসে। তার বৃত্ত বুকে লেপ্টে থাকা ওড়নার সাথে চলে বাউরি বাতাসের গোপন খুনসুটি। তাই দেখে আইল্যান্ডে সে থাকা ডায়মন্ড বালকেরা রচে নির্ঘুম ইয়াবা রাত্রি।

পরীর স্পর্শ মানেই অন্ধ আবেগ ও ভেজা উত্তেজনার স্বতঃস্ফুর্ত করমর্দন। সুখকাতর পুরুষের পোয়াতি হাহাকারের ত্যুবরণ।

পরী কিংবা নারী। তার চপল চাহনিতে চিত্রল নেশার প্রেসক্রিপশন ভাসে। আর ঝিলিক ঠোটের দংশনের মাঝে পাই থিবীর তীব্রতম মদের উত্তেজনা।